কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) বরাবর টানা ১১ রাত ধরে উভয় দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি চলছে। এরইমধ্যে দুই দেশ নিজেদের সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শনে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ও বাহিনীর সরব উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবেলায় একাধিক রাজ্যে নিরাপত্তা মহড়া চালানোর নির্দেশ দিয়েছে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (৫ মে) ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নির্দেশনা দেয়, যা বুধবার (৭ মে) থেকে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এটি ১৯৭১ সালের পর সবচেয়ে বড় ধরনের প্রস্তুতি। তখন ভারত-পাকিস্তান সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল এবং দেশজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা ছিল জারি। এবারও যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জনগণকেও এই মহড়ায় যুক্ত করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতিতে—
বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন শুনলে কী করতে হবে তা সাধারণ মানুষকে শেখানো হবে
শিক্ষার্থী ও বেসামরিক নাগরিকদের আত্মরক্ষামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে
ব্ল্যাকআউট পরিস্থিতি ও নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে দ্রুত সরে যাওয়ার কৌশল শেখানো হবে
গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সুরক্ষা নিশ্চিত করা
সিভিল ডিফেন্সের উদ্ধার মহড়া ও পরিকল্পনা হালনাগাদ করা হবে
ইতোমধ্যে পাঞ্জাবের ফিরোজাবাদে মঙ্গলবার (৬ মে) রাতে সেনা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আধঘণ্টার ব্ল্যাকআউট মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। সেনা কর্তৃপক্ষের অনুরোধে বিদ্যুৎ বিভাগ নির্ধারিত সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ব্ল্যাকআউট কৌশল প্রয়োগের সক্ষমতা যাচাই করতেই এ মহড়া হয়।
কাশ্মীরে হামলার ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছেন। মোদি বলেন, “যারা এই ষড়যন্ত্র করেছে বা হামলা চালিয়েছে, তারা কল্পনাতীত শাস্তি পাবে।” তিনি সশস্ত্র বাহিনীকে প্রতিশোধমূলক হামলার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং ইতোমধ্যে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন।