গাজা উপত্যকায় একটি নতুন ও আরও তীব্র সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই অভিযানে গাজার জনগণকে নিরাপত্তার কথা বলে স্থানান্তর করারও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৫ মে) এক হিব্রু ভাষার ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, “ইসরায়েলি সেনারা গাজায় যাবে, অভিযান চালাবে এবং সেখান থেকে আর ফিরে আসবে না। আমাদের লক্ষ্য সম্পূর্ণ বিপরীত—গাজা দখল ও হামাসকে পরাজিত করা।”
আলজাজিরা জানায়, ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা সোমবার সর্বসম্মতভাবে একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে, যাতে গাজায় অভিযান সম্প্রসারণ, রিজার্ভ বাহিনী মোতায়েন এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এই পরিকল্পনার মধ্যে গাজা উপত্যকার সম্পূর্ণ সামরিক দখল এবং জনগণকে দক্ষিণে স্থানান্তরের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলের এই পরিকল্পনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, “এই পরিকল্পনা বহু বেসামরিক মানুষের মৃত্যু এবং গাজার আরও ধ্বংস নিশ্চিত করবে। গাজা একটি ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়া উচিত।”
হামাসের শীর্ষ নেতা মাহমুদ মারদাওয়ি বলেছেন, “আমরা কেবল একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে ইসরায়েলের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত চুক্তি গ্রহণ করব।”
এদিকে ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও এই পরিকল্পনা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেনাপ্রধান এয়াল জামির হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, গাজায় পূর্ণমাত্রায় অভিযান চালালে সেখানকার ইসরায়েলি জিম্মিদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের টানা হামলায় এখন পর্যন্ত ৫২,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে হাজার হাজার শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ।