ভারতীয় উপমহাদেশে আয়ুর্বেদিক ও ভেষজ চিকিৎসা বহুযুগ ধরে প্রচলিত। বেশির ভাগ মানুষের ধারণা, ওষুধের চেয়ে প্রাকৃতিক উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য ভালো ও উপকারী। তবে এগুলোতেও কিছু ক্ষতিকর উপাদান থাকতে পারে, যার অনেকটাই আমাদের অজানা। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এসব ওষুধ সেবনের ফলে ক্ষতি হতে পারে, এমনকি মৃত্যুঝুঁকিও দেখা দিতে পারে।
আয়ুর্বেদিক বা ভেষজ ওষুধের ক্ষতিকর উপকরণ
- সিসা,পারদ, আর্সেনিক;
- আয়ুর্বেদিক বা ভেষজ ওষুধ সম্পর্কে পর্যাপ্ত গবেষণার অভাবে এতে থাকা অনেক ক্ষতিকর উপাদান অজানা;
- আয়ুর্বেদিক ও ভেষজ ওষুধ খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক স্বীকৃত নয়।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
সাময়িক লক্ষণ: পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, ক্ষুধামান্দ্য, ডায়রিয়া বা অ্যালার্জির সমস্যা।
মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- লিভারের এনজাইমগুলোর ভারসাম্যহীনতা নষ্ট হয়ে যায়;
- কিডনির সমস্যা দেখা দেয়, ফলে হাত, পা, মুখসহ পুরো শরীর ফুলে যায়;
- ব্লাডপ্রেশার বেড়ে যায়;
- দ্রুত ওজন বাড়ায়;
- স্নায়ুর ক্ষতি হয়;
- বাচ্চাদের শারীরিক বিকাশ বিলম্বিত হয়।
যাদের সেবনের ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে
- বাচ্চা
- গর্ভবতী
- স্তন্যদানকারী মা
- বয়স্ক ব্যক্তি
- উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস আছে যাঁদের
- দীর্ঘদিন লিভার, হার্ট ও কিডনিজনিত জটিল রোগে ভুগছেন যাঁরা
সচেতনতা
- যেকোনো ওষুধ বা ভেষজ উপাদান সেবন করার আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- যাঁরা বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন করেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে।
- অনেকে অ্যালোপ্যাথি আর ভেষজ একসঙ্গে চলবে না ভেবে ভেষজ খাওয়ার সময় নিজের ডায়াবেটিস, প্রেশারের বা অন্যান্য ওষুধ বন্ধ করে দেন। এটি ভীষণ বিপজ্জনক।
শহরের তুলনায় গ্রামে আয়ুর্বেদিক বা ভেষজ ওষুধ গ্রহণের প্রবণতা অনেক বেশি। অজ্ঞতার কারণে এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শ ব্যতীত দীর্ঘদিন এসব ওষুধ সেবনের ফলে শরীরে ধীরে ধীরে সিসা, আর্সেনিক ও পারদের মতো ক্ষতিকর পদার্থ জমে লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হয়, যা একজন মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে।