1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Shahriar Rahman : Shahriar Rahman
  3. [email protected] : Jannatul Naima : Jannatul Naima

ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে যেসব ভিটামিন, ব্যাঘাত ঘটায় যে উপাদান

  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪

পর্যাপ্ত ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ঘুমের মধ্যে দেহের নানান ক্ষতি পুষিয়ে নেয়। ঘুমের ব্যাঘাত আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। নানা কারণে আমাদের ঘুম ঠিকমতো হয় না। তবে বর্তমানে অস্থির সময়ে, মানসিক চাপে, মোবাইল-টেলিভিশন ইত্যাদি যন্ত্রের বৈদ্যুতিক পর্দার দিকে তাকিয়ে অতিরিক্ত সময় কাটানোসহ নানান কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।

বিশেষ করে ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি থাকলে ঘুমে সমস্যা হয়। খাদ্যতালিকা শুধু আমাদের স্বাস্থ্যের ওপরেই প্রভাব ফেলে না। এটি আমাদের ঘুমকেও প্রভাবিত করে। ঘুমের সমস্যা কাটাতে নানান পন্থা অবলম্বন করা যায়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে বিভিন্ন ভিটামিনও ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক।

ভিটামিন ‘এ’ 

আপনারা অনেকেই জানেন দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে ভিটামিন ‘এ’ প্রয়োজন। তবে ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন নিউট্রিশন’ সাময়িকীতে প্রকাশিত চীনের ‘টং ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়— ভিটামিন এ জৈবিক ঘড়ির ওপর প্রভাব রেখে ঘুমচক্র নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সময়মতো ঘুম আসতে সহায়তা করে।

ডিম, গাঢ় সবুজ শাকসবজি যেমন— পালংশাক, কমলা ও লাল রঙের খাবার গাজর, কুমড়া, আম, পেঁপে ভিটামিন ‘এ’র উৎস।

ভিটামিন ‘বি-ওয়ান’

‘থায়ামিন’ নামে পরিচিত এই ভিটামিনের অভাব ঘুমে ব্যাঘাত তৈরি করে। তবে ২০২২ সালে কোরিয়ার সিউলয়ে অবস্থিত ‘ইয়সেই ইউনিভার্সিটি কলেজ’ ও ২০২৪ সালে ইতালির ‘ইউনিভার্সিটি অব সালের্নো’র গবেষকদের করা— দুই গবেষণাতেই দাবি করা হয় থায়ামিনের অপর্যাপ্ততার কারণে অতিরিক্ত ঘুম হয়।

অনেকে এই বেশিমাত্রার ঘুমের আশায় থাকলেও বিষয়টি মানব শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব রাখে। অতিরিক্ত ঘুমালে মাথা ভার হয়ে থাকে, ব্যস্ত সময়ে ঘুম ঘুম-ভাব বেশি হয়, যা কাজের ক্ষতি করে।

পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘বি-ওয়ান’ খাওয়া যেতে পারে চর্বিহীন মাংস, সামুদ্রিক খাবার, মটরশুঁটি ও ভিটামিন বি-ওয়ান সমৃদ্ধ বাদামি চাল, বাদামি পাস্তা ইত্যাদি।

ভিটামিন ‘বি-সিক্স’ 

শান্তিপূর্ণ ঘুমের জন্য এই ভিটামিন প্রয়োজন হয়। এ বিষয়ে মার্কিন পুষ্টিবিদ অ্যামি ডেভিস রিয়েলসিম্পল ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, ‘ভিটামিন বি-সিক্স আসলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কাজ করে। ফলে ভালো ঘুমের সহায়ক হয়।‘

ভিটামিন ‘বি-নাইন’ 

সাধারণভাবে ‘ফোলেইট’ নামে পরিচিত ভিটামিন ‘বি-নাইন’ ঘুমের সময় চোখ বন্ধ রাখতে সাহায্য করে। কারণ প্রাথমিকভাবে এই ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স ‘নিউরোট্রান্সমিটার’গুলোর পাশাপাশি সেরোটনিন ও মেলাটনিন সংশ্লেষণ ঘটায়। এগুলো ঘুম-জাগরণের নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে।

অর্থাৎ ফোলেইট’য়ের অভাবে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। অভাব পূরণ করতে খাওয়া যেতে পারে পালংশাক, মটর, ছোলা, পূর্ণ শস্য, লেটুস ব্রকলি, সামুদ্রিক খাবার ও ডিম।

ভিটামিন ‘বি-টুয়েলভ’ 

ডেভিস বলেন, ঘুম নিয়ন্ত্রণের হরমোন মেলাটোনিন উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এই ভিটামিন। গ্রিসের ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্রিট’য়ের গবেষকদের করা গবেষণায় বলা হয়েছে— ‘ইনসমনিয়া’সহ সারা দিন অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণ হতে পারে বি-টুয়েল্ভ’য়ের অপর্যাপ্ততা। দুগ্ধজাত ও সামুদ্রিক খাবার, চর্বিহীন মাংস ও ডিম হলো এই ভিটামিনের চমৎকার উৎস।

ভিটামিন ‘সি‘

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এই ভিটামিন। তবে ডেভিন বলেন, পর্যবেক্ষণভিত্তিক গবেষণায় দেখা গেছে— এই ভিটামিন পর্যাপ্ত আরামদায়ক ঘুমের ভূমিকা রাখে।

সিট্রাস বা টক ফল, বেরি, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, টমেটো, ফুলকপি, আলু ও তরমুজ থেকে মিলবে ভিটামিন ‘সি’।

ভিটামিন ‘ডি’

ডেভিস বলেন, এই ভিটামিনের অপর্যাপ্ততার কারণে ঘুমের নানান সমস্যা তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে. ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট বা ট্যাবলেট গ্রহণের মাধ্যমে ঘুমের মান যেমন উন্নত হয়, তেমনি দ্রুত ঘুমিয়ে পড়তেও সাহায্য করে।

ডেভিস ব্যাখ্যা করেন, কারণ এই ভিটামিন ঘুম-জাগরণের চক্রতে ভূমিকা রাখে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ভিটামিন ‘ডি’র অভাবে ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’সহ ঘুমের মানও পড়ে যায়।

সূর্যের আলোতে পাঁচ থেকে ৩০ মিনিট থাকা ছাড়াও সামুদ্রিক খাবার, মাছের তেল থেকে মিলবে ভিটামিন ‘ডি’।

ভিটামিন ‘ই’

চর্বিতে দ্রবণীয় একটা ভিটামিন, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করতে পারে। থাইল্যান্ডের ‘মাহিডোল ইউনিভার্সিটি’র গবেষকদের করা পর্যবেক্ষণ অনুসারে এই তথ্য জানান, পুষ্টিবিদ ডেভিস। 

পালংশাক, বাদাম, বীজ, ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, ডেম- এই ভিটামিনের উৎস।

ভিটামিন ‘কে’ 

২০১৯ সালে ‘নিউট্রিয়েন্টস’ সাময়িকীতে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের ‘সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ফার্মাভিট এলএলসি’র করা পর্যবেক্ষণ ও ২০২৩ সালে চীনের ‘সোঝু মেডিকেল কলেজ অব সুচো ইউনিভার্সিটি’র গবেষকদের করা গবেষণায় দাবি করা হয়— ভিটামিন ‘কে’ ঘুমের মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।

এ ছাড়া পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘কে‘ গ্রহণ করতে পারলে- স্বাস্থ্যকরভাবে রক্ত জমাট বাঁধতে ও হাড় গঠনেও কাজ করে। লেটুস, পালংশাক, ব্রকলি, রঙিন সবজি, ডিম থেকে মিলবে এই ভিটামিন।

ভালো ঘুমের ব্যঘাত ঘটায় যেসব উপাদান

পয়সার উল্টো পিঠের মতো কিছু উপাদান ঘুমে সমস্যাও তৈরি করে। যে কারণে ঘুমার সময়ের আগে এসব উপাদান সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে অ্যালকোহল, ক্যাফেইন ও চিনি।

ডেভিস বলেন, ‘এসব মস্তিষ্ক উত্তেজিত রাখে। তাই ভালো ঘুমের জন্য দুপুরের পর কফির পরিবর্তে ভেষজ চা পান উপকারী। এ ছাড়া চকোলেট, চিনিযুক্ত খাবারও এড়াতে হবে।’

আর ঘুমের অন্তত দুই-তিন ঘণ্টা আগে অ্যালকোহল ও চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণ এড়াতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটেগরীর আরো খবর
© 2024  All rights reserved by Desheralo.com
Customized BY NewsTheme