1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Shahriar Rahman : Shahriar Rahman
  3. [email protected] : Jannatul Naima : Jannatul Naima

তানিয়া হত্যা মামলায় রিমান্ডে লে. কর্নেল কুদ্দুসুর

  • আপডেট : শনিবার, ১ জুন, ২০২৪

রাজধানীর হাজারীবাগে তানিয়া আক্তার (৩৫) খুনের মামলায় লে. কর্নেল কুদ্দুসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন আজ শুক্রবার কুদ্দুসুরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

রিমান্ডের তথ্যের সত্যতা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক মাহফুজুল ইসলাম। তবে সেনাবাহিনীতে কুদ্দুসুরের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে আইএসপিআর বা পুলিশ কেউ কিছু জানায়নি।

পুলিশের এই কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, হাজারীবাগের ব্যবসায়ী তানিয়া আক্তার খুনের মামলায় কুদ্দুসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আজ ঢাকার আদালতে হাজির করে হাজারীবাগ থানা–পুলিশ। পরে তাঁকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারির শুরুতে তানিয়া হাজারীবাগের মিতালী রোডের একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে ওঠেন। ১৯ জানুয়ারি নিজ কক্ষে তিনি খুন হন। এরপর ২১ জানুয়ারি তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় ফ্ল্যাটের মালিককে। পরে তদন্তে উঠে আসে, এ ঘটনায় মো. কুদ্দুসুর রহমান নামে সেনাবাহিনীর ওই কর্মকর্তা জড়িত।

নিহত তানিয়ার ভাই ও মামলার বাদী মো. তন্ময় হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বোন খুন হওয়ার কিছুদিন পর তাঁরা জানতে পারেন, এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তা জড়িত। তিনি বলেন, ‘হয়তো আমার বোনের কাছে ওই কর্মকর্তার এমন কোনো তথ্য ছিল, যা প্রকাশ্যে এলে তিনি বিপাকে পড়বেন। এ কারণেই তিনি তাঁকে হত্যা করে ফোনটি নিয়ে যান।’

তানিয়ার ভাড়া বাসার আশপাশের বিভিন্ন ক্লোজড সার্কিট টিভি (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গেছে। এসব ফুটেজে দেখা যায়, ১৯ জানুয়ারি বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটে তানিয়া বাসার গলিতে ঢোকেন। দুই হাতে কাপড়ের দুটি থলে এবং কাঁধে ঝোলানো ছিল ভ্যানিটি ব্যাগ। পেছনে কিছুটা দূরত্ব রেখে হাঁটছিলেন কুদ্দুসুর রহমান। তাঁর পরনে ছিল জ্যাকেট, কাঁধে ব্যাগ (ব্যাকপ্যাক) ও মুখে মাস্ক। এর কিছুক্ষণ পরের আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, ওই বাসা থেকে হুডি পরে বের হচ্ছেন কুদ্দুসুর রহমান, পিঠে ব্যাগ। তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করছেন।

এর আগে অন্য ফুটেজগুলোতে দেখা যায়, ঘটনার দিন বিকেলে কুদ্দুসুর ও তানিয়া ধানমন্ডির বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করেন। তখন কুদ্দুসুর মাস্ক পরে ছিলেন না। ধানমন্ডি থেকে দুজন রিকশা নিয়ে হাজারীবাগে ঢোকেন। বাসার কাছাকাছি দূরত্বে এসে তাঁরা রিকশা থেকে নেমে যান। এরপর তানিয়ার পেছন পেছন দূরত্ব বজায় রেখে কুদ্দুসুর হাঁটতে থাকেন।

তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তানিয়ার স্বামী কুমিল্লায় থাকেন। দুজনের বোঝাপড়ায় ঘাটতি থাকায় তানিয়া বেশির ভাগ সময় ঢাকায় নিজ পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। এর মধ্যে তানিয়ার সঙ্গে কুদ্দুসুর রহমানের সখ্য হয়। তাঁরা নিয়মিত মুঠোফোনে যোগাযোগ করতেন। একটা পর্যায়ে তানিয়া চেয়েছিলেন তাঁদের বিয়ে হোক। তাঁদের এই সম্পর্কের বিষয়টা তানিয়া তাঁর দু–একজন ঘনিষ্ঠ বান্ধবীকেও জানিয়েছেন। এমন কিছু সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে তানিয়া হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনের সূত্র পায় পুলিশ। পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে তানিয়াকে হত্যার পর তাঁর মুঠোফোন, জুতা, ভ্যানিটি ব্যাগ, বাসার চাবিসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত কুদ্দুসুর রহমান ব্যাগে ভরে নিয়ে যান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, কুদ্দুসুর রহমানকে গ্রেপ্তারে সহযোগিতা চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে গত ১২ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, তানিয়া হত্যার সঙ্গে মো. কুদ্দুসুর রহমান জড়িত। মামলার তদন্তকালে সাক্ষ্য-প্রমাণ, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, মুঠোফোনের কলতালিকা, আর্থিক লেনদেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে পাওয়া তথ্য–প্রমাণ ও তানিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যালোচনা এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটেগরীর আরো খবর
© 2024  All rights reserved by Desheralo.com
Customized BY NewsTheme