ঢাকার মতো লক্কড়-ঝক্কড় ও রংচটা বাস চলে তা বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শহরে আধুনিক গণপরিবহন চলাচল করে। কিন্তু ঢাকায় লক্কড়-ঝক্কড় ও রংচটা গাড়ি চলে। এগুলো দেখতেও তো খারাপ লাগে। এর চেয়ে ঢাকার বাইরে মফস্বল এলাকাগুলোতে উন্নতমানের গণপরিবহন চলে।’
বুধবার বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিআরটিএর উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, এই লক্কড়-ঝক্কড় বাসগুলোর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। যদিও এখন ডাম্পিং করতে গেলে দেখা যায় ওই ধরনের গাড়ি আর রাস্তা বের হবে না। তখন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ ওঠে।কাদের বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা আনতে বিআরটিএ অনেক কর্মসূচি ও আইন করে। কিন্তু রেজাল্ট কী? সড়কের দুর্ঘটনা এবং যানজট তো কমছে না।
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ হবে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা পৃথিবীর কোনো দেশেই বন্ধ হবে না। তবে দুর্ঘটনা ও যানজট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যানজট এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কিছু যদি আমরা করতে না পারি তাহলে আমাদের নিরাপদ সড়কের স্বপ্ন দেখতে কী লাভ। প্রতিনিয়তই আমাদের কথা শুনতে হচ্ছে।
ঈদের আগে ও পরে সড়ক দুর্ঘটনা বেশি ঘটে জানিয়ে কাদের বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা মানুষ হিসেবে আমাকে কষ্ট দেয়। একটা মন্ত্রণালয়ে এতদিন দায়িত্ব পালন করার পরও সড়ক দুর্ঘটনা কমছে না। অথচ নিয়ম তো এমন হওয়া উচিত ছিল, এই বছরের ঈদে যে যানজট এবং দুর্ঘটনা ঘটবে, আগামীতে তা আরও কমবে। কিন্তু সেখানে দুর্ঘটনা বাড়ছে। তাহলে আমরা কী কাজ করছি? আমাদের টিম ওয়ার্কের কী সফলতা আছে? এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, উচ্চ হর্ন বর্তমানে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেগুলো হাসপাতাল, স্কুল- কলেজের সামনে বেশি করে বাজানো হয়। আমি নিজেও এখন থেকে ১০ বছর আগে আমার প্রোটেকশন গাড়ির হুটার বন্ধ করে দিয়েছে। ঢাকায়ও বাজানো হয় না, ঢাকার বাইরেও না।
তিনি বলেন, জরুরিসেবার যানবাহন ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি গাড়িতে এই হুটার বাজানো বন্ধের সিদ্ধান্তটা আমরা নিতে পারি। জরুরিসেবা যান (অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস) ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব গাড়িতে হুটার বাজানো একেবারে নিষিদ্ধ।
সভা থেকে সিটির ভেতর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ, হেলমেট ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ ফিটনেস ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি স্ক্র্যাপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সড়কমন্ত্রী বলেন, সভায় বেশি সিদ্ধান্ত নিয়ে যদি তা বাস্তবায়ন করা না যায়, তাহলে সেই উদ্যোগ ফলপ্রসূ হয় না। এছাড়া এই মুহূর্তে আর্থিকভাবে অসুবিধায় ফেলবে এমন কোনো প্রকল্প এখন আমাদের নেওয়া উচিত নয়।