দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গুরুত্ব পেয়েছে পরবর্তী নির্বাচনের আলোচনা। অনেক সদস্যই নতুন নেতৃত্ব বাছাই ও পরিবর্তনের বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলেন।
গত শনিবার ঢাকার ধানমন্ডির সীমান্ত সম্ভারে বিকাল থেকে রাত অবধি চলে ওই অনুষ্ঠান। নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের অনুপস্থিতির পরও দ্রুত সময়ে বড় ধরনের আয়োজনের কারণে অনুষ্ঠানের সমালোচনাও করতে দেখা যায় অতিথিদের।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার গত ১৩ আগস্ট পদত্যাগ করেন। এর কয়েকদিন পর গোটা পরিচালনা পর্ষদই পদত্যাগ করে। ফলে গত ১০ সেপ্টেম্বর এই সংগঠনের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের উপসচিব মুহাম্মদ সাঈদ আলীকে।
এর মধ্যে আবার গত ৬ নভেম্বর ঢাকার উত্তরা থেকে শমী কায়সারকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। ফলে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল অন্যান্য সময়ের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্বল্প পরিসরের এই আয়োজনে অনুষ্ঠান শুরু না হতেই নাস্তা শেষ, নৈশ্বভোজ পরিবেশনে বিলম্ব—এসব কারণে কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করছিলেন সদস্য ও তাদের আমন্ত্রিত অতিথিরা।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। কাটা হয় দশকপুর্তির কেক।
স্টার্ট আপদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন আইসিটি সচিব। ই-কমার্স খাতের গুরুত্ব তুলে ধরে শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, এ খাতের ব্যবসায়ী ও একাডেমিয়ানদের পাশে থাকবে সরকার। সবাইকে নিয়েই নতুন বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
এর আগে বিপিও (বিজেন প্রসেস আউটসোর্সিং) ও কল সেন্টার খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) সভাপতি তানভীর ইব্রাহিম ও এসএমই ফাউন্ডেশন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ই-ক্যাবের বর্ষপূর্তিতে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রশাসক মুহাম্মদ সাঈদ আলী ই-ক্যাবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানান। এজন্য সঠিক ভোটার তালিকা তৈরির প্রথম ধাপ হিসেবে সদস্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ নথি-পত্রের কথা বলেন। এজন্য একটি প্রতিনিধি দল গঠন করার কথাও বলেন তিনি। এরপর সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ের গঠন করা হবে নির্বাচন কমিশন।
সদস্য হওয়ার যোগ্য নয় এমন কোনও প্রতিষ্ঠান ই-ক্যাবে থাকলে সে বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দাখিলের আহ্বান জানান ই-ক্যাব প্রশাসক।
২০১৪ সালে মাত্র ৫৩ জন ফাউন্ডিং মেম্বার নিয়ে শুরু করে ই-ক্যাব। গত ৮ নভেম্বর ১০ বছরে পদার্পন করে এই সংগঠনটি। এর বর্তমান সদস্যসংখ্যা প্রায় ২৮০০।