1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Shahriar Rahman : Shahriar Rahman

বিশ্বশান্তি কামনা বড়দিনের প্রার্থনায়

  • আপডেট : বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

“বড়দিন দেশের খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ ও সম্প্রীতিকে আরো সুদৃঢ় করবে বলে আমি আশা করি,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

পৃথিবীর সকল অশান্তি দূর করে শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় যিশুর আগমনী দিনটি উদযাপন করছে দেশের খ্রিস্টান সম্প্রদায়।

বড়দিন বুধবার হলেও এই উৎসব শুরু হয়েছে আগের রাত থেকেই। বাড়িতে বাড়িতে রঙিন স্টার ছোট, ছোট আকৃতির ক্রিসমাস ট্রি, রঙিন বল বা মরিচ বাতি দিয়ে সাজসজ্জা করা হয়। দিনের শুরুতে প্রার্থনা, শুভেচ্ছা বার্তা বিনিময়, কেক-পিঠা তৈরি ও খাওয়া দাওয়ার মাধ্যমে চলছে উৎসব উদযাপন।

রাজধানীর অভিজাত হোটেল-রেস্তোরাঁতেও চলছে বড়দিনের বিশেষ আয়োজন। এই আয়োজনে রয়েছে প্রার্থনা; আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। কোনো কোনো জায়গায় শিশুদের জন্য উপহারের ঝুলি নিয়ে হাজির থাকে সাদা চুলদাড়ির বুড়ো সান্তাক্লজ। এছাড়া কোনো কোনো শপিংমলও সাজানো হয়েছে বড়দিন উপলক্ষে।

দুই হাজার বছরের বেশি সময় আগে ২৫ ডিসেম্বর ইসরাইলের বেথেলহেম শহরে কোনো এক গোশালায় কুমারী মাতা মেরির গর্ভে জন্ম নেন যিশু। তার জন্মকাহিনীকেই এ উৎসবের মূল ভিত্তি ধরা হয়।

খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার ও মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করার জন্য ঈশ্বর যিশুকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন।

কাকরাইলের ‘সেন্ট মেরীস ক্যাথিড্রাল’ ছাড়াও তেজগাঁওয়ে ‘হলি রোজারি’, তেজগাঁওয়ের জপমালা রাণী গির্জা, ইস্কাটনের সেন্ট থমাস চার্চসহ রাজধানীর বিভিন্ন চার্চ সেজেছে বড়দিনের সাজে। আলোকসজ্জা ছাড়াও রাখা হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। চার্চে বানানো হয়েছে যিশু খ্রিষ্ট্রের জন্মের সময়ের প্রতীকী গোশালা। উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে চার্চ সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতেও।

চার্চগুলোয় বড়দিন আনুষ্ঠানিকতা আগের রাত থেকে শুরু হলেও বড়দিনের সকালে হয় মূল প্রার্থনা। কাকরাইলে ‘সেন্ট মেরীস ক্যাথিড্রাল’ এ শীতের সকালে নানা বয়সের মানুষ আসেন প্রার্থনায় অংশ নিতে।

বিশপ সুব্রত বনিফাস গমেজ বলেন, “সবাইকে জানাই আজকের বড়দিনের শুভেচ্ছা এবং সকলের জন্য মঙ্গল কামনা করি। প্রভু যীশুখ্রিস্টের জন্মতিথি আমরা স্মরণ করছি। জন্মের পরে বলা হয়েছিল, তোমার জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।

“তিনি মানবজাতির মধ্যে শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে পৃথিবীতে আসেন। বিশ্বজুড়ে যে যুদ্ধবিগ্রহ, অশান্তি চলছে, সেখানে যেন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়- সেই প্রার্থনা করি।”

ফাদার জয়ন্ত এস গোমেজ বলেন, “যিশুখ্রিস্ট শান্তি রাজ, তিনি শান্তি দিতেই পৃথীবিতে এসেছিলেন। তার কাছে আমরা প্রার্থনা করেছি- যেন এই জগৎ সংসারে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সবার মধ্যে যেন সেই সদিচ্ছা জাগ্রত হয়।

সকাল থেকেই সেন্ট মেরী’স ক্যাথেড্রাল চার্চের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও সেনা সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়। এছাড়া সাদা পোশাকেও ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

প্রার্থনা করতে চার্চে আসা একজন নারী ভক্ত বলেন, “সবাই মিলে ভালো থাকব, প্রার্থনা করব- সবাই যেন ভালো থাকে। ছোটবেলায় যেসব আত্মীয়স্বজন পেয়েছি, তারা এখন নেই। তারা যেন ভালো থাকে- এই প্রার্থনা করব।”

বড়দিন উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, “একটি বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত এবং ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো মজবুত করতে হবে। আমি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে একটি আধুনিক, উন্নত বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রায় সামিল হওয়ার আহ্বান জানাই।”

গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ’ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে সবাইকে দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এদেশে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে বসবাস করছে। এখানে রয়েছে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজস্ব ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা। বড়দিন দেশের খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ ও সম্প্রীতিকে আরো সুদৃঢ় করবে বলে আমি আশা করি।”

বড়দিন উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটেগরীর আরো খবর
© 2024  All rights reserved by Desheralo.com
Customized BY NewsTheme