ডিভোর্স মানেই কি কেবল আইনি বিচ্ছেদ? না, অনেক সময় দুজন মানুষ আইনি বিচ্ছেদ ছাড়াও মানসিকভাবে একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যান। তাঁরা হয়তো একই ছাদের নিচে বসবাস করছেন, তবে তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্কে কোনো উষ্ণতা, ভালোবাসা বা আবেগ নেই। এই অবস্থাকেই বলা হয় সাইলেন্ট ডিভোর্স।
এই যুগে সাইলেন্ট ডিভোর্সের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। তবে এর তথ্য পাওয়া কঠিন, কারণ এতে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেই, নেই সামাজিক ঘোষণাও। অনেক দম্পতি সমাজের চোখে সুখী হলেও বাস্তবে তাঁদের সম্পর্ক মৃতপ্রায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী ও পিএইচডি গবেষক হাজেরা খাতুন বলছেন, বহুবিধ কারণেই এমন বিচ্ছেদ বাড়ছে।
সম্পর্কের ভিত হলো বিশ্বাস ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা। সেই ভিত যদি দুর্বল হয়ে পড়ে, বা ছোট ছোট অভিমান জমতে জমতে পাহাড় হয়ে যায়, তাহলে এক সময় সম্পর্ক নিঃশব্দেই শেষ হয়ে যেতে পারে।
আরও কিছু কারণ হতে পারে:
অতিরিক্ত আধিপত্য বা নিয়ন্ত্রণ
আর্থিক সংকট
সন্তান পালনে মতানৈক্য
দাম্পত্য জীবনের স্বাভাবিক চাহিদা পূরণ না হওয়া
শারীরিক ও মানসিক দূরত্ব
অনেক সময় সামাজিক চাপ, পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা, সন্তানের ভবিষ্যৎ বা আর্থিক নিরাপত্তার অভাবের কারণে অনেকে আইনি বিচ্ছেদে যান না। বিশেষ করে নারীরা সামাজিক নিরাপত্তা হারানোর ভয়েও সিদ্ধান্ত নেন না। ফলে তাঁরা অনেকটা রুমমেট-এর মতো জীবনযাপন করতে বাধ্য হন।
১. একই বাসায় থেকেও মানসিক ও শারীরিক বিচ্ছিন্নতা থাকে।
২. একসঙ্গে সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ হয় না।
৩. ছুটির দিনগুলো আলাদাভাবে কাটানো হয়।
৪. বিতর্কিত বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়।
৫. শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কথাবার্তা হয়—যেমন বাজার বা খাবারের আলোচনা।
৬. ব্যয় ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়।
৭. আর্থিক সুবিধা, বিমা, সন্তানের সুস্থতা বা সামাজিক কারণে একসঙ্গে থাকা হয়।
৮. সন্তান না থাকলে একসঙ্গে খাওয়ার প্রয়োজনীয়তাও থাকে না।
৯. ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা করা হয় না।
১০. সম্পর্ক জোড়া লাগানোর কোনো চেষ্টাও আর থাকে না।