বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি পাওয়া দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক নগদ লিমিটেড নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ট্রাস্ট (উই) -এর উদ্যোগে উই হাটবাজারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক থেকে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ আর্থিক ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। নারী উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের এই সাহসী ও দক্ষ নারীদের শক্তি কাজে লাগিয়ে শহর-গ্রাম ও নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।
চলতি বছরই পূর্ণাঙ্গ যাত্রা শুরু করবে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক। জানা গেছে, ইতিমধ্যে তারা ব্যাংক চালুর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এরইমধ্যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে ক্রেডিং রেটিং করা বা বিশ্বের সর্বাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যবহার করার মতো বিষয়গুলো ট্রায়াল দেয়া হয়েছে।
দেশের প্রথম এমএফএস হিসেবে নগদ নারী উদ্যোক্তা বা এজেন্ট তৈরি করেছিলো। যার ফলে অন্য পেশার মতো এমএফএস বাজারে একজন নারী উদ্যোক্তার অংশগ্রহণও নিশ্চিত করেছিল নগদ।
নগদ ডিজিটাল ব্যাংক যাত্রা শুরু করার আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তারা জামানতহীনভাবে দেশের মানুষের মধ্যে এক অঙ্কের মুনাফায় ঋণ বিতরণ করবে। মূলত পরিচালন ব্যয় শূন্যের কাছাকাছি হওয়ায় এবং যাবতীয় ঋণের কর্মকাণ্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে পরিচালনা করায় তাদের পক্ষে জামানতবিহীন ঋণ প্রদান করা সম্ভব হবে। সেই সাথে নারী উদ্যোক্তাদের জন্যও জামানতবিহীন ঋণ প্রদান করবে তারা।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের একটি সেবা হিসেবে যাত্রা শুরু করে নগদ মোবাইল ব্যাংকিং। শুরুতেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট খোলা, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যয় কমানোর মতো কাজ করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে নগদের গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে ৯ কোটি পার করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটি দৈনিক গড়ে এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা লেনদেন করছে। এর ফলে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের আয়েও প্রভাব পড়েছে।
নগদ লিমিটেড ও ডাক বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, নগদের সেবা থেকে মোট আয়ের ৫১ শতাংশ পায় বাংলাদেশ ডাক বিভাগ, বাকি ৪৯ শতাংশ পায় নগদ লিমিটেড।
প্রথম বছর শেষে, অর্থাৎ ২০২০ সালেই নগদ ডাক বিভাগকে ১.১২ কোটি টাকা আয়ের ভাগ প্রদান করে। ২০২১ সালে ৩.৩২ কোটি এবং ২০২২ সালে ৪.৫০ কোটি টাকা প্রদান করে নগদ।
২০২৩ সালে তারা পার করে ফেলেছে ৫ কোটির ঘর। এ বছরের জন্য নগদ ৫১ শতাংশ আয়ের ভাগ হিসেবে ডাক বিভাগকে ৫ কোটি ৫১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৮ টাকার রাজস্ব বুঝিয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সচিবালয়ে নগদ কর্তৃপক্ষ ডাক বিভাগের ২০২৩ সালে প্রাপ্য লভ্যাংশের চেক হস্তান্তর করে। অনুষ্ঠানে নগদ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী তানভীর এ মিশুকের কাছ থেকে চেক গ্রহণ করেন ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তরুণ কান্তি সিকদার। সে সময় উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।