বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন। আজ বুধবার দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে আমীর খসরু সাংবাদিকদের জানান, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের সঙ্গে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগসহ চলমান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আমরা কী ভাবছি, অন্তর্বর্তী সরকার কী করছে, তাদের এক মাস কেমন গেল, আগামী দিনে আমাদের কী প্রত্যাশা, বাংলাদেশের কী প্রত্যাশা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের জন্য কত সময় লাগতে পারে, তাঁরা জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য কী কী পরিবর্তন দরকার, সেগুলো কীভাবে এগোচ্ছে, এ বিষয়েও তাঁরা জানতে চেয়েছেন। এই অঞ্চলের ভূরাজনীতি ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা জানান, সার্বিক আলোচনার পর অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের ধারণা, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে।
নির্বাচনের সময়-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, আমরা যৌক্তিক সময়ের কথা বলছি। সময়ের যৌক্তিকতা এখানে যাঁরা অংশীজন আছেন, তাঁরা বিবেচনা করবেন। আসলে আমরা সময়সীমা বলছি না, একটা সময় দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাচ্ছি না। আমরা চাচ্ছি, সরকার সফলভাবে তাদের কাজগুলো শেষ করবে। যত দ্রুত সম্ভব নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এর মাধ্যমে নির্বাচন–প্রক্রিয়ার কাজটা শুরু হতে হবে। আমি নিশ্চিত, সেই কাজগুলো তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) খুব দ্রুত করবে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপি সার্বিকভাবে সহায়তা করছে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, সমগ্র জাতির প্রত্যাশা, এই সরকার জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সমর্থ হবে। আমরা এই সরকারকে সার্বিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি এবং দিয়ে যাব। বাংলাদেশের মানুষ ভবিষ্যতের বাংলাদেশ তৈরির যে নতুন স্বপ্ন দেখছে, এটা আমাদের সবাইকে মিলে করতে হবে। এটা কেউ একা করতে পারবে না। জাতির একটা ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকতে হবে।
দুপুর সাড়ে ১২টায় বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার প্রবেশ করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব তাঁকে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়ন করেন। এতে অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন ক্লিনটন পোবকে ও প্রথম সচিব লারা অ্যাডামসও যোগ দেন।