সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ক্লিনিক্যাল শিক্ষা সংকট: শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বর্ষ থেকে ‘ওয়ার্ড সেবা’ বা হাতে-কলমে ক্লিনিক্যাল শিক্ষার কথা থাকলেও এখনো তারা তা থেকে বঞ্চিত। কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল এখনো চালু না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা রোগীর সংস্পর্শে থেকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন না। এতে তাঁদের শিক্ষায় ঘাটতি তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বারবার আবেদন ও অনুরোধ সত্ত্বেও হাসপাতাল চালু হয়নি। ফলে তাঁরা ১৫ এপ্রিল থেকে ক্লাস বর্জন করে ধারাবাহিক মানববন্ধন, বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও স্মারকলিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২১ এপ্রিল তাঁরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন।
বর্তমানে কলেজে পাঁচটি ব্যাচে ২,২৮০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। কলেজটি ২০২১ সালে অস্থায়ীভাবে চালু হলেও ২০২৩ সালে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়। সেখানে আধুনিক একাডেমিক ভবন, হোস্টেল, হাসপাতাল ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু জনবল ও কার্যক্রম ঘাটতির কারণে হাসপাতাল চালু করা যায়নি।
দূরবর্তী জেলা সদর হাসপাতালে নামমাত্র ক্লাস হলেও তা নিয়মিত ছিল না। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়। চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম বলেন, “ভবন প্রস্তুত হলেও হাসপাতাল চালু হচ্ছে না—এটা আমরা বুঝতে পারছি না।” আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়েছেন, জুনের মধ্যে হাসপাতাল চালু, সপ্তাহে ছয় দিন ক্লিনিক্যাল ক্লাস এবং যাতায়াতের জন্য অন্তত তিনটি বাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
অধ্যক্ষ মো. মুস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া শিক্ষার্থীদের দাবিকে যৌক্তিক বলে স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, আপাতত জেলা সদর হাসপাতালে ক্লাস চালানোর ব্যবস্থা হচ্ছে এবং একটি বাসও মিলেছে। তবে পুরো সমস্যার সমাধান হাসপাতাল চালুর মধ্যেই নিহিত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রকল্প পরিচালক স্বাধীন কুমার দাস জানান, হাসপাতাল ভবনের কাজ ৮৯% শেষ হয়েছে, এবং প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সময়মতো জনবল নিয়োগসহ সবকিছু সম্পন্ন করে হাসপাতাল চালু করা যাবে।