1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Shahriar Rahman : Shahriar Rahman

বিসিপিএস সভাপতির কার্যালয়ে তালা, প্রতিষ্ঠানে স্থবিরতা, অনিশ্চয়তায় ১২ হাজার পরীক্ষার্থী

  • আপডেট : বুধবার, ১৯ মার্চ, ২০২৫

বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) সভাপতির কার্যালয়ে বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত কিছু চিকিৎসক তালা লাগিয়ে দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির কাউন্সিলরদের পদত্যাগ চান তাঁরা। এর পর থেকে কাউন্সিলররা কার্যালয়ে যাচ্ছেন না। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে তৈরি হয়েছে স্থবিরতা। স্নাতকোত্তর পর্যায়ের প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী তাঁদের পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।

আগামী ১ জুলাই ফেলো অব কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (এফসিপিএস) পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা আছে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি ও অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২ মার্চ। সভাপতির কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তর বন্ধ থাকায় এসব কাজ শুরু হয়নি। কে, কবে তালা খুলবে, তার ঠিক উত্তর কারও কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না।

বিসিপিএস স্নাতকোত্তর চিকিৎসা শিক্ষা ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে। এখান থেকে এফসিপিএস ডিগ্রি দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিসিপিএসের ডিগ্রিকে গুরুত্ব ও সম্মান দেওয়া হয়। দেশে মেডিকেল শিক্ষার মান নিয়ে নানা সমালোচনা হলেও বিসিপিএস মান ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

গত সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে বিসিপিএসে গিয়ে দেখা যায়, সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা অফিসে আসেননি। বিসিপিএস ভবনের অষ্টম তলায় সভাপতির কার্যালয়ে তালা। কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিছু চিকিৎসক গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সভাপতির কার্যালয়সহ বিভিন্ন কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন। তাঁরা কাউন্সিলরদের পদত্যাগ করতে বলেন। এরপর থেকে সভাপতি বা বিসিপিএসের কোনো কাউন্সিলর আসছেন না।

ওই দিন অন্যদের সঙ্গে বিসিপিএসে গিয়েছিলেন সার্জন ফিরোজ কাদের। যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কোনো দল বা গোষ্ঠীর হয়ে কথা বলছি না। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে এবং ভবিষ্যতে পরীক্ষার কাজে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সে জন্য আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।’ ওই দিনের ঘটনার ছবিতে ফিরোজ কাদেরসহ যেসব চিকিৎসককে দেখা যায়, তারা বিএনপিপন্থী চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত। একাধিক চিকিৎসক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে তাদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিসিপিএস স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এর নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী বিসিপিএস কাউন্সিল। কাউন্সিলের সদস্য ২০ জন। চারজন সদস্য সরকারের মনোনীত। অপর ১৬ জন বিসিপিএসের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত। প্রতি চার বছরের জন্য আটজন করে নির্বাচিত হন। এ বছর আটজনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। সেই আট কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছিল। এরই মধ্যে বাকি আটজনের পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারির পরই বাকি সবাই পদত্যাগপত্র জমা দেন।

এখন সরকারকে অর্থাৎ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।
রশীদ-ই-মাহবুব, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি
পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া কাউন্সিলরদের মধ্যে আছেন স্নায়ুবিশেষজ্ঞ ও নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক কাজী দীন মোহাম্মদ, শিশুরোগবিশেষজ্ঞ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সাবেক প্রধান আবিদ হোসেন মোল্লা, ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক টিটু মিয়া, স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাকসুদুল আলম, ইমতিয়াজ ফারুক, বিল্লাল আলম, নূর হোসেন ভূঁইয়া শাহীন। তবে তাঁদের পদত্যাগপত্র কেউ গ্রহণ করেননি।

পদত্যাগকারী চিকিৎসকদের কেউ কেউ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতের সরকারি সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা পেশাদার চিকিৎসক হিসেবে সুপরিচিত। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কেউ কেউ বলছেন, বিসিপিএসে যে পরিবর্তনই আসুক না কেন, প্রতিষ্ঠানটিকে সক্রিয় করা দরকার এবং গুণগত মানও বজায় রাখতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিপিএসের একজন কর্মকর্তা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ১ জুলাই এফসিপিএস পরীক্ষার আগে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর বেশ কয়েক ধরনের ওয়ার্কশপ ও থিসিস উপস্থাপন শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা হয়নি। সার্বিকভাবে পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এসব ছাড়াও বিসিপিএসের দৈনন্দিন অনেক কাজ বন্ধ আছে।

ঘটনার ব্যাপারে প্রবীণ চিকিৎসক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব প্রথম আলোকে বলেন, এখন সরকারকে অর্থাৎ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটেগরীর আরো খবর
© 2024  All rights reserved by Desheralo.com
Customized BY NewsTheme