মঙ্গলবার (মে ২১) সকালে মতিঝিলে অবস্থিত এফবিসিসিআই আইকনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এফবিসিসিআই’র প্রেস ও মিডিয়া বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এম শোয়েব চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম। ডিরেক্টর ইনচার্জ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক মো. রাকিবুল আলম (দিপু)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, স্বাধিকার আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের ব্যবসা, বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে দেশের গণমাধ্যম। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রেস ও মিডিয়াকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। এজন্য সংবাদপত্র শিল্পের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মীদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে গণমাধ্যম মালিকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এম. শোয়েব চৌধুরী বলেন, অন্যান্য শিল্পের মতো সংবাদ মাধ্যমকেও ব্যবসা করে টিকে থাকতে হয়। কাজেই অন্যান্য খাতের ন্যায় সংবাদ মাধ্যমকেও কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া উচিত। কাগজ, কালি, ছাপার যন্ত্রাংশের ওপর আরোপিত কর কমিয়ে আনা দরকার। টেলিভিশনের ব্যান্ডউইথের ওপরও বিদ্যমান কর কমানো প্রয়োজন। সম্পূরক বাজেটে প্রেস ও মিডিয়ার জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখাসহ এই শিল্পকে জনগুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ মাধ্যমের সংকট দূর করতে কমিটির উদ্যোগে একটি কৌশলপত্র তৈরি করে তথ্যমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারক এবং অংশীজনদের নিয়ে শীঘ্রই সেমিনার আয়োজন করা হবে বলেন জানান কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ মো. রাকিবুল আলম (দিপু)। এজন্য কমিটির সদস্যদের সুনির্দিষ্ট মতামত লিখিত আকারে জমা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে- সংবাদ মাধ্যমের জন্য কর সহনীয় করা, সহজ শর্তে ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা, গণমাধ্যমকর্মীদের বেতন-বোনাস ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত, এ খাতে ব্যবহৃত উপকরণ ও যন্ত্রাংশ প্রাপ্তি সহজিকরণ, ক্রোড়পত্র ও বিজ্ঞাপন প্রাপ্তিতে পত্রিকা সমূহের সম-অধিকার নিশ্চিতকরণ, সরকারের কাছে বিজ্ঞাপন বাবদ প্রাপ্ত বিল দ্রুত পরিশোধ করাসহ বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন কমিটির সদস্যরা। এছাড়া, বেসরকারি খাতের সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের সম্পৃক্ততা বাড়াতে এফবিসিসিআই’র উদ্যোগে প্রতি ৩ মাস পর পর সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের মালিক, সম্পাদকসহ, ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে নিয়মিত সৌজন্য সভা আয়োজনের আহ্বান জানান তারা।
পাশাপাশি, সংবাদ মাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে উৎসাহ ও ইয়েলো জার্নালিজমকে (হলুদ সাংবাদিকতা) নিরুৎসাহিত করা ও সচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ও মুক্ত আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পায়।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে এফবিসিসিআইর পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন-অর-রশিদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের বোর্ড অব গভর্নরসের (পিডিবিএফ) সদস্য বোরহান উদ্দিন আহমেদ, দ্য ব্লেজার বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী রাজিব ইউ এ চপল, এফবিসিসিআই’র ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান জাফর ইকবাল, কমিটির কো-চেয়ারম্যান আক্কাস মাহমুদ, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু, তাওহিদা সুলতানা, এজাজ মোহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।