ইসরাইলি সেনাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করেছে গাজার যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাস। তাদের পাল্টা আঘাতে নিহত হয়েছে ইসরাইলের কমপক্ষে ১২ সেনা। ইসরাইল যখন ট্যাংক, যুদ্ধবিমান দিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে- তখন হামাসের অস্ত্র রকেট এবং আইইডি বা বিস্ফোরক। তা দিয়েই চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে স্তম্ভিত করে দিচ্ছে ইসরাইলি সেনাদের। গাজার উত্তরাঞ্চলে উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। বিশেষ করে জাবালিয়ায় এই যুদ্ধ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেখানে আবাসিক ভবনগুলোকে এবং এম্বুলেন্সকে টার্গেট করে হামলা করছে ইসরাইলি সেনারা। কিন্তু রকেট ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে তাদেরকে ঘেরাও করে আক্রমণ চালাচ্ছে হামাস। দক্ষিণে রাফায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল। সেখানে সংকট অকল্পনীয় বলে জানাচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল রেসক্যু কমিটি।
বাস্তুচ্যুত লাখো মানুষ খাদ্য ও পানির অভাবে চরমভাবে ভুগছে। ওদিকে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরাইলে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিপরিষদে তীব্র বিরোধ দেখা দিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট অপরিকল্পিত গাজাযুদ্ধ নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে। ওদিকে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরাইলি সেনাদের গুলিবিনিময় হয়েছে। হিজবুল্লাহ লেবানন থেকে ৪০টি রকেট ছুড়েছে দখলীকৃত গোলান উপত্যকার দিকে। হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা ইসরাইলের সেনাবাহিনীর বেশ কিছু অবস্থানকে লক্ষ্য করে কমপক্ষে ৬০টি কাতিউশা রকেট নিক্ষেপ করেছে। লেবাননের বালবেকের বেকা অঞ্চলে বুধবার রাতে ইসরাইলি হামলার জবাবে তারা এই হামলা করেছে।
এ খবর দিয়ে অনলাইন আল জাজিরা বলছে, গাজার উত্তরে জাবালিয়ায় আল ফালুজা এলাকায় একটি বাড়িতে গোলা নিক্ষেপ করেছে ইসরাইলি সেনারা। এতে চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের ভেতরে আল ফালুজা কবরস্থানকেও টার্গেট করেছে ইসরাইল। গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের অভয় দিয়েছেন ফরাসি এমপি থমাস পোর্টেস। ইসরাইলি দখলদারিত্বের পক্ষে থাকার জন্য তিনি ফরাসি সরকারের সমালোচনা করেন। প্যারিসে প্রতিবাদ বিক্ষোভে তিনি বক্তব্য রেখেছেন। বলেছেন, রাজনীতিবিদ এবং মিডিয়া গণহত্যা শব্দটিকে স্বীকার করে না। তারা এই শব্দটিকে সব মাধ্যম থেকে মুছে দিয়েছে। গাজায় যে ঘটনা ঘটছে তা গণহত্যা। এসব অপরাধে জড়িত হওয়া, ফিলিস্তিনপন্থি প্রতিবাদ বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের আচরণে তিনি ফরাসি সরকারের নিন্দা জানান। তিনি প্রতিবাদী জনতাকে বলেন- যারা আপনাদেরকে বাধা দিতে চায়, কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে চায়- তাদের কারণে ভীত হবেন না। ফিলিস্তিনিদের সমর্থন দেয়া বন্ধ করবেন না। গণহত্যায় এই সরকারের সমর্থন দেয়া আমাদেরকে বন্ধ করতে হবে। ওদিকে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে সুইডেনের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর গোটেনবার্গ। ডাগেনস নাইহেটার এ বিষয়ে জানাচ্ছে, ওই শহর পরিচালনা পরিষদ ইসরাইলি পণ্য বিক্রি বন্ধ করতে চাইছে। সুইডিশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, লেফট পার্টি এবং গ্রিন পার্টির সমন্বয়ে সৃষ্ট জোট এমন প্রস্তাব করেছে। গোটেনবার্গের মিউনিসিপ্যাল বোর্ডের চেয়ারম্যান জোনাস অ্যাটেনিয়াস বলেছেন, ইসরাইল অন্যায়ভাবে পশ্চিমতীর দখল করে রেখেছে। তারা গাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করে পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে। দখলদার বাহিনীকে আর্থিক সমর্থনের জন্য আমাদের দেয়া ট্যাক্স ব্যবহার হতে দেয়া যায় না।