মন্ত্রিসভায় এপোস্টল কনভেনশন স্বাক্ষরের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক এই কনভেনশনে স্বাক্ষর সম্পাদন হলে বিদেশগামী শিক্ষার্থী ও মানুষের বিভিন্ন সনদ, দলিল, হলফনামায় নিজ দেশের যথাযথ সত্যায়ন থাকলে অন্য দেশে গিয়ে পুনরায় সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না এবং এর ফলে দেশের মানুষের বছরে সাশ্রয় হবে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।
সোমবার (২০ মে) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নিজ মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, এই প্রস্তাবটি সোমবার মন্ত্রিসভায় পাস হয়েছে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত আজ মন্ত্রিসভা দিয়েছে। এটি কার্যকর হলে শিক্ষার্থী, অভিবাসী, কর্মী, পারিবারিক পুনর্মিলন প্রত্যাশীসহ বিদেশগামী সকলের যে নানা ডকুমেন্ট এ দেশে এবং বিদেশের দূতাবাসসহ নানা দফতরে সত্যায়নের প্রয়োজন হয়, সেটি শুধু এ দেশে সত্যায়ন করলেই হবে।
ড. হাছান মাহমুদ ব্যাখ্যা করে বলেন, বাংলাদেশে সব দেশের দূতাবাস নেই। ৯০টি দেশের দূতাবাস রয়েছে দিল্লিতে। সেখান থেকে সত্যায়ন করে আনতে আবার ভারতের ভিসা লাগে। এসবের জন্য যে অর্থ, সময় ও পরিশ্রম ব্যয় হয়, এই কনভেনশনে যুক্ত হলে তা বেঁচে যাবে, বছরে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি
এটি কার্যকর হতে প্রায় ছয় মাস লাগবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এপোস্টল কনভেনশনে যুক্ত হতে এর ১২৬টি সদস্য রাষ্ট্রকে অবহিত করতে হয়, কিছু আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে।
সাংবাদিকরা এ সময় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ মৃত্যুকে মর্মান্তিক ও অত্যন্ত দুঃখজনক বলে বর্ণনা করেন ও নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
তিনি বলেন, প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, হেলিকপ্টারটি জরুরি অবতরণ করেছে, কিন্তু পরে দেখা যায় সেটি ক্র্যাশ করেছে। আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক জানাচ্ছি।
কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে সম্প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনায় বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘এখন পর্যন্ত সেখানে বাংলাদেশী ছাত্রদের কোনো গুরুতর আহত বা হতাহতের খবর নেই। পাশের দেশ উজবেকিস্তানের তাসখন্দে অবস্থানরত আমাদের রাষ্ট্রদূতকে সেখানে যেতে বলা হয়েছে। তিনি স্থানীয় সময় বিকেলে বিশকেকে পৌঁছে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিতে ক্যাম্পাস ভিজিট করবেন এবং কিরগিজ পররাষ্ট্র ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন।
একজন শিক্ষার্থীর দেশে ফেরার জন্য খোলা চিঠি দেয়া প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ ধরনের কোনো আবেদন করেননি।
এ সময় অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওঙ্গের ঢাকা সফরকালে মঙ্গলবার বিকেলে তার সাথে বৈঠক হবে বলে জানান ড. হাছান মাহমুদ। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ সাক্ষাতে দ্বিপক্ষীয় বিষয়াবলীর মধ্যে বিশেষত বাংলাদেশে অস্ট্রেলীয় বিনিয়োগ, বাংলাদেশীদের অভিবাসন, মৌসুমি কর্মসংস্থান, সেখানে প্রবাসীদের কল্যাণ, জ্বালানি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা প্রাধান্য পাবে বলেন হাছান মাহমুদ।