লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার নবীনগর গ্রামের ২০ বছর বয়সী রাব্বি ইসলাম জন্মের পর থেকে কখনো ভাত খাননি। ছয় মাস বয়সে প্রথমবার ভাত মুখে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। বরং জোর করে খাওয়াতে গেলে বমি করে ফেলতেন এবং একবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে পর্যন্ত নিতে হয়েছিল।
রাব্বির বাবা রমজান আলী পেশায় ঝালমুড়ি বিক্রেতা, আর মা ফরিদা বেগম একজন গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাব্বি দ্বিতীয়। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
রাব্বি শুধু ভাতই নয়, বিরিয়ানি, পায়েস কিংবা শাকসবজি—এ ধরনের খাবারও খেতে পারেন না। এসব খাবার দেখলেই বমি আসে বলে জানান তিনি। ছোটবেলায় দুই বছর বয়স পর্যন্ত তিনি মায়ের বুকের দুধ ও গরুর দুধ খেয়েছেন। এরপর ধীরে ধীরে রুটি, নুডলস, ডিম, মুড়ি ও বিভিন্ন ফলমূল খাওয়া শুরু করেন। বর্তমানে তার প্রধান খাবার হিসেবে রয়েছে নুডলস, মাছ এবং মাংসের তরকারি।
রাব্বি বলেন, “আমি কোনো দিন ভাত খাইনি। ভাতের গন্ধই সহ্য করতে পারি না। ভাত দেখলেই বমি আসে। এখন নুডলস খেয়ে ভালো থাকি। আল্লাহর রহমতে আমি সুস্থ আছি।”
রাব্বির মা ফরিদা বেগম জানান, বহুবার চিকিৎসক দেখিয়েছেন ছেলেকে, কিন্তু ফল মেলেনি। সীমিত আয়ের সংসারে ভাত বাদ দিয়ে অন্য খাবারের ব্যবস্থা করা কঠিন হলেও ছেলেকে বিকল্প খাবার দিয়েই বড় করেছেন তাঁরা।
প্রতিবেশী হামিদুল ইসলাম বলেন, “ছোটবেলা থেকে রাব্বিকে দেখছি, কখনো ভাত খেতে দেখিনি।”
এ বিষয়ে বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও পাটগ্রাম উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা হারুন মিয়া জানান, “রাব্বি ইসলাম নামের একজন যুবক ভাত খান না—এমনটা শুনেছি।”
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, “এ ধরনের খাদ্যাভ্যাসের পেছনে কোনো নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। মানুষ যেকোনো খাবারে অভ্যস্ত হতে পারে। তবে ভাত না খেয়ে যদি কেউ পুষ্টিকর বিকল্প খাদ্য গ্রহণ করে, তাহলে সুস্থ থাকা সম্ভব।”