1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Shahriar Rahman : Shahriar Rahman

রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা হয়নি, জুনে নির্বাচন নিয়ে সংশয়

  • আপডেট : রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সালেহ্ হাসান নকীব গত সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন, পাঁচ মাসের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) নির্বাচন আয়োজন করবেন। সেই সময়সীমা পেরোনোর এক মাস পর গত ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে রাকসু নির্বাচনের পথনকশা প্রকাশ করা হয়। সেই পথনকশা অনুযায়ী ১৩ এপ্রিল রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা হয়নি।

তবে রাকসু ও বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সাত সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। যদিও পথনকশা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ না হওয়ায় জুনে নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ছাত্রসংগঠনগুলো।

আরও পড়ুন
চাকসু নির্বাচনের রূপরেখা তৈরি হয়নি
৬ ঘণ্টা আগে
চাকসু নির্বাচনের রূপরেখা তৈরি হয়নি

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় এক দশক পর ১৯৬২ সালে রাকসু প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর মোট ১৪টি নির্বাচন হয়। সর্বশেষ রাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। এরপর ৩৬ বছর ধরে রাকসু নির্বাচন হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন রাকসু নির্বাচনের দাবি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাকসু নির্বাচনের পথনকশা (রোডম্যাপ) প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পথনকশা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশিত না হওয়ায় আগামী জুনে রাকসুর নির্বাচন আয়োজন করা যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা।
পথনকশা অনুযায়ী, গত ২৮ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অনলাইনে রাকসু বিধিমালার খসড়া সংশোধনী সম্পর্কে পরামর্শ ও মতামত দিয়েছেন। ১৩ এপ্রিল রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ করার কথা ছিল। তবে সেটি গতকাল পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। যদিও ১৬ এপ্রিল রাকসুর গঠনতন্ত্র অনুমোদন এবং রাকসু ও বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য সাত সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।

আরও পড়ুন
নির্ধারিত সময়ে জাকসু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা
৪ ঘণ্টা আগে
নির্ধারিত সময়ে জাকসু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা
রাকসু নির্বাচনের পথনকশায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২৮ এপ্রিল রাকসুর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, ৩০ এপ্রিল ভোটার তালিকা বিষয়ে আপত্তি গ্রহণ ও ১৩ মে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া ১৫ মে মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৯ মে। ২০ মে মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। ২২ মে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ এবং ২৫ মে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। পথনকশায় বলা হয়েছে, প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৭ মে। আর জুন মাসের তৃতীয় থেকে চতুর্থ সপ্তাহে রাকসুর নির্বাচন হবে।

পথনকশা অনুযায়ী ১৩ এপ্রিল রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ করতে না পারার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, এটা করতে না পারলেও পথনকশার পরের তারিখগুলো ঠিক রাখার চেষ্টা আছে কর্তৃপক্ষের।
পথনকশা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশিত না হওয়ায় আগামী জুনে রাকসুর নির্বাচন আয়োজন করা যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা। রাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব প্রথম আলোকে বলেন, রাকসু নির্বাচনের যে পরিবেশ দরকার, সে পরিবেশ ক্যাম্পাসে বিদ্যমান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। যদিও রোডম্যাপ অনুযায়ী এখনো নির্বাচনী আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়নি, এটি দুঃখজনক। তিনি আশা করেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রাকসু নির্বাচন হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ফাইল ছবি
রাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী। তাঁর অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি নির্দিষ্ট ছাত্রসংগঠন ও যাদের সুপারিশে ক্ষমতায় এসেছে, তাদের সুবিধা দিচ্ছে।

বারবার সময় পরিবর্তন ও পথনকশা অনুযায়ী কাজ না করায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা কষ্ট পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন দশক পর রাকসু নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ ব্যাপারে উৎসুক। প্রশাসনের উচিত শিক্ষার্থীদের পালস বুঝে পথনকশা অনুযায়ী কাজ করা।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোডম্যাপ অনুযায়ী বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়নি। জুনে রাকসু নির্বাচনের আয়োজন নিয়ে প্রশাসনের আন্তরিকতা নিয়ে আমরা সন্দিহান।’
রাকসু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা ও প্রহসনমূলক আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ সিন্ডিকেটে রাকসুর গঠনতন্ত্র অনুমোদন ও নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের আচরণবিধি তৈরি করার কাজ শুরু করেছে।’ পথনকশা অনুযায়ী ১৩ এপ্রিল রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ করতে না পারার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা করতে না পারলেও পথনকশার পরের তারিখগুলো ঠিক রাখার চেষ্টা আছে কর্তৃপক্ষের।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটেগরীর আরো খবর
© 2024  All rights reserved by Desheralo.com
Customized BY NewsTheme