শুরু হয়ে গেল বর্ষাবাদল। বৃষ্টির সঙ্গেই বিনা আমন্ত্রণে চলে আসে ডেঙ্গুর মৌসুম। বিগত বছরের মতো এবারও ডেঙ্গুর বিস্তার ব্যাপক হতে পারে—শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ডেঙ্গুতে যাতে বিগত বছরগুলোর মতো বিপর্যয় না হয়, সে ব্যাপারে প্রথম থেকেই সতর্ক থাকতে হবে। ডেঙ্গু হলে চিকিৎসকেরা বারবার রক্তচাপ দেখতে বলেন কেন, তা জেনে রাখা ভালো।
ডেঙ্গুতে রক্তচাপে কী সমস্যা হয়
ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বিপজ্জনক যে ঘটনা ঘটে, সেটি হচ্ছে ছোট ছোট রক্তনালি দিয়ে তরল নির্গমন। যেটাকে মেডিকেলের ভাষায় বলে ক্যাপিলারি লিকেজ। পরিণতিতে শরীরের রক্তনালির ভেতর থেকে পানি বা তরল বের হয়ে যায়। এ কারণে অজান্তেই রক্তচাপ কমে যায়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, অনেকের প্লাটিলেট কমে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়, সেটা চলমান থাকলে রক্তচাপ কমে গিয়ে শকেও চলে যেতে পারে।
রক্তচাপ মাপা কেন গুরুত্বপূর্ণ
কারও যদি ডেঙ্গু হয়, সে ক্ষেত্রে নিয়মিত রক্তচাপ মাপা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাভাবিকভাবে রক্তচাপ একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। অনেকের, বিশেষ করে মেয়েদের রক্তচাপ এমনিতেই কম থাকতে পারে। তাই মাপার আগে জেনে রাখা ভালো, তাঁর স্বাভাবিক রক্তচাপ কেমন। বাড়িতে একটা রক্তচাপ মাপার যন্ত্র থাকা ভালো।
ডিজিটাল মেশিন হলে, সন্দেহ হলে আরেকবার দেখে নিতে হবে। যদি ব্লাড প্রেশার সিস্টোলিক ১০০-এর নিচে নেমে যায় এবং ডায়াস্টোলিক ৬০-এর নিচে নেমে যায়, তখন সতর্ক হতে হবে। এর থেকে যখন আরও নিচে নামতে থাকবে, সঙ্গে যদি হাত–পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়, তবে বুঝতে হবে শকের দিকে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জরুরি। আবার রক্তচাপ মাপার পর, ওপরের আর নিচের রক্তচাপের যে ফারাক (সিস্টোলিক থেকে ডায়াস্টোলিক বিয়োগ করলে পাওয়া যায়), তাকে বলে পালস প্রেশার। পালস প্রেশার যদি ২০-এর কম হয়, অর্থাৎ দুটোর পার্থক্য যদি ২০-এর কম হয়, তার মানে রোগী শকে যাচ্ছেন। তখন তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
অনেকে হাসপাতালে যখন আসেন, তখন দেখা যায়, রক্তচাপ এত নিচে নেমে গেছে যে প্রেশার রেকর্ডই করা যাচ্ছে না। তখন সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিয়েও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় না। অনেক সময় মৃত্যুঝুঁকিও থাকে। এ কারণে আগে থেকে সতর্ক থাকা জরুরি।