রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকার রুপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় একদল ডাকাত হানা দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা দুইটার দিকে ডাকাতদল হানা দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য ব্যাংকটি ঘিরে রেখেছে।
ডাকাত দলের সদস্যরা ব্যাংক কর্মকর্তাদের জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে জানা গেছে। ব্যাংকের ভেতরে কতজন ডাকাত অবস্থান করছে সেটি এখন নিশ্চিত হাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে থাকা একাত্তর টেলিভিশনের রিপোর্টার জানিয়েছেন, ডাকাত দল ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, ব্যাংকের ভেতরে দুই থেকে তিনজন ডাকাত অবস্থান করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ডাকাতদের আত্মসমর্পণ করার আহবান জানাচ্ছেন। ব্যাংকটিতে সাতজন কর্মকর্তা আছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ব্যাংকটিতে সেবা নিতে যাওয়া গ্রাহকরা অনিরাপত্তায় ভুগছেন। তাদের মধ্যে আতঙ্ক ভর করেছে। ব্যাংকে ডাকাত দলের হানা দেয়ার বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ব্যাংকের পাশের একটি মসজিদ থেকে মাইকিং করে ডাকাত আসার কথা জানানো হয়। এতে ব্যাংকটির সামনে ভিড় করেছেন স্থানীয় জনতা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ব্যাংক ভবনের ভেতরে ছয়-সাতজন ডাকাতের একটি দল প্রবেশ করে। পরে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ উপস্থিত সবাইকে ডাকাতদল জিম্মি করে। হঠাৎ ব্যাংক এলাকা থেকে চিৎকার শুনে আমরা দৌড়ে আসি। এ সময় ডাকাতদল ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে খবর পেয়ে তাদের উদ্ধারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
তারা আরও জানান, ডাকাত দল সব সদস্যদের হাতে ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। ডাকাত দল ব্যাংকে প্রবেশের সময় ভেতরে ১৫ থেকে ২০ জন গ্রাহক থাকতে পারেন বলে তাদের ধারণা। তারা বলছেন, ব্যাংক কর্মকর্তা যখন মধ্যাহ্নের আহার নিতে ব্যস্ত ছিলেন, ঠিক সেই সময়ে ডাকাত দল প্রবেশ করে।
এরপর র্যাব ও সেনাবাহিনী এসে উপস্থিত হয়। এখনো ভেতর থেকে কাউকে উদ্ধার করা হয়নি। সবশেষ খবর পর্যন্ত ডাকাত দলটি ব্যাংকের ভেতর অবস্থান করছিলো। বাইরে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য ইউনিটের সদস্যরাও রয়েছেন। কিভাবে জিম্মি নাটকের অবসান হবে সেটি এখনো নিশ্চিত নয়।
একাত্তরের প্রতিবেদক রূপালী ব্যাংকে ওই শাখার ম্যানেজার শেখর মন্ডলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সফল হলেও আতঙ্কে ঠিক মতো কথাও বলতে পারছিলেন না। কাঁপা গলায় তিনি জানান, ঘটনার সময় তিনি ব্যাংকের বাইরে ছিলেন। তাদের সঙ্গে আমরা নেগোশিয়েট করছি। ব্যাংকের ভেতরে বেশ কয়েকজন দশ জনের মতো কর্মকর্তা রয়েছে। ভেতরে কতজন ডাকাত রয়েছে সেটি তিনি জানাতে পারেননি।
ব্যাংকের জিএম ইসমাইল হোসেন শেখ বলেন, ব্যাংকের ভেতরে তিন জন ডাকাত অস্ত্রসহ ঢুকেছে। তারা আটকা পড়ার পর নিরাপদ প্রস্থান ও ১৫ লাখ টাকা দাবি করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।