দেশটির অন্তর্বর্তী প্রশাসনের দাবি, ভূমধ্যসাগরীয় বন্দর তার্তুসের কাছে আসাদ অনুগত বাহিনী এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।
সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নেতৃত্বধীন নতুন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনীর ‘চোরাগোপ্তা’ হামলায় সিরীয় পুলিশের ১৪ জন সদস্য নিহত ও আরও ১০ জন আহত হয়েছেন।
দেশটির অন্তর্বর্তী প্রশাসন বৃহস্পতিবার ভোররাতে জানায়, ভূমধ্যসাগরীয় বন্দর তার্তুসের কাছে গ্রামীণ এলাকায় মঙ্গলবার হামলার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
প্রতিবেদনগুলোর বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, রাজধানী দামেস্কের নিকটবর্তী কুখ্যাত সেদনায়া কারাগারের সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তাকে তার ভূমিকার জন্য গ্রেপ্তার করার চেষ্টার সময় আসাদ সরকারের অনুগত বাহিনীর ‘অবশিষ্টরা’ নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর চোরাগোপ্তা হামলা চালায়।
চলতি মাসের প্রথমদিকে ইসলামপন্থি হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী বাহিনীর হাতে প্রেসিডেন্ট আসাদ সরকারের পতন ঘটে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানায়, এই সংঘর্ষে তিন হামলাকারীও নিহত হয়। পরে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে নিরাপত্তা বাহিনী।
অন্য আরেক ঘটনায় সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ মধ্যাঞ্চলীয় শহর হোমসে রাতভর কারফিউ জারি করে বলে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে।
সংখ্যালঘু শিয়া আলাউতিদের একটি মসজিদে হামলা চালানো হচ্ছে, সামাজিক মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর অস্থিরতা দেখা দিলে হোমসে কারফিউ জারি করা হয়।
সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ওই ভিডিওটি পুরনো, নভেম্বরের শেষ দিকে বিদ্রোহীরা যখন আলেপ্পোতে আক্রমণ করে এটি তখনকার ঘটনা আর অজ্ঞাত গোষ্ঠী ওই মসজিদে হামলা চালিয়েছিল।
হোমসের বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, ওই মসজিদে হামলার প্রতিবাদে হোমসের আলাউতি ও শিয়া মুসলিম সম্প্রদায় বিক্ষোভ মিছিল বের করলে সেখানে সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
এসওএইচআর জানায়, এ সহিংসতায় এক বিক্ষোভকারী নিহত ও পাঁচজন আহত হন।
হোমসের পাশাপাশি তার্তুস ও লাতাকিয়া এবং আসাদের নিজ শহর কারদাহায়ও বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানা গেছে।
এইচটিএসের নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী বাহিনী দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা থেকে অভিযান শুরু করে মাত্র ১০ দিনের মধ্যে রাজধানী দামেস্ক দখল করে আসাদ পরিবারের ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের শাসনের অবসান ঘটায়। দেশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর এইচটিএস সিরিয়ার সব ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার অঙ্গীকার করেছে।
আসাদ পরিবার শিয়াদের দলছুট সম্প্রদায় আলাইউতির সদস্য। এই সম্প্রদায়ের সদস্যরাই সাবেক শাসকদের রাজনৈতিক ও সামরিক অভিজাতদের বৃহত্তর অংশ ছিলেন।